গাছের পাতা সবসময় গাছে থাকেনা সময়ের সাথে সাথে তা ঝড়ে পড়ে।তাই বলে গাছটা তো মারা যায়না, আবার নতুন পাতা গজায় গাছ সবুজে সবুজে ভরে ওঠে। জীবনে প্রতিটা আবেগ প্রতিটা স্বপ্ন ভাঙার আর্তনাদ সন্ধ্যা হতে হতে মন কোনে বাসা বাধে কষ্টগুলো গভীর থেকে গভীরতম হয়। কেউ জানেনা কেউ বুঝেনা বাহ্যিকভাবে হাসি খুশী থাকার অন্তরালে কতটা কষ্ট বহমান তার ভিতরে শুধু সেই জানে।জীবন গল্প কখনো সিনেমার মতো ভাগ্য বদলে যায় না। কষ্ট পেতে পেতে অভ্যস্ত মানুষেরা শুধু হাসে। কারণে অকারণে হাসে। হাসির কথাতেও হাসে আবার দুঃখের কথাতেও হাসে।তারা নিজেরাও তাদের এই অকারণে হাসার রহস্য জানেনা। বাহির থেকে দেখলে মনে হবে তাদের মতো সুখী আর কেউ নেই। অনেকেই তাদের এত হাসিখুশি থাকা দেখে মনে মনে হিংসেও করবে, ইশ! যদি ওর মত হতে পারতাম? কিন্তু ভিতর টা কেউ দেখে না, কেউ বুঝে না! কেউ জানতে চায় না। কেউ হৃদয়ের রক্তক্ষরণ দেখে না, গগনবিদারী চিৎকার কেউ শুনে না,কেউ সাহস করে হাতটা ধরে বলে না, চিন্তা করো না, আমি পাশে আছি তো! জীবনটাই সংগ্রামের, চেষ্টা চালিয়ে যাও, আমি সবসময় পাশে আছি। অথচ এক ফোঁটা জল পেলে বুকের ভেতর জিইয়ে রাখা স্বপ্নের গাছটা জেগে উঠতো, কাছে এসে পাশে বসে একটুকু, বিশ্বাস করুন জাস্ট একটুকু সাহস দিলে অনেকেই স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে পারতো! কাছের মানুষের একটু সাহস লক্ষ্য জয়ের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকতে পারত। এতটুকু কোমল ছোঁয়া পেলে হৃদপিন্ডে গড়ে ওঠা মৃণালীনির বরফগুচ্ছ গলে যেত! এগিয়ে যেতে পারত দূর, বহুদূর। পিছন ফিরে তাকাতে হত না আর। স্বপ্ন জয় করেই তবে ঘরে ফিরত। কিন্তু আফসোস আমরা বিপদে পড়লে, হতাশাগ্রস্থ হলে কাউকে কাছে পাইনা। যার সাথে গলায় গলায় ভাব ছিল সেও আমাদের এড়িয়ে যায়, পারলে আরও বিপদে ফেলে যায়, একসাথে বাকি জীবন কাটানোর আশ্বাস দেওয়া মানুষটাও দুঃসময়ে পাশে থাকে না, আঘাতে আঘাতে দুর্বিষহ জীবন উপহার দিয়ে অন্যের সাথে চলে যায়। এটাই সত্যি তোমার কাছ থেকে যতদিন মানুষ কিছু পাবে ততদিন তোমাকে মাথার মুকুট করে রাখবে, যখন ই তোমার প্রয়োজন শেষ তোমাকে ডাস্টবিনে ফেলে দিতেও সে দুবার ভাববে না! কি স্বার্থপর পৃথিবী! কি অদ্ভুত এই লীলাখেলা! মানুষ চিনতে চিনতেই জীবনের কয়েক বসন্ত চলে যায়। তারপরও আমরা ভাল আর খারাপ মানুষের পার্থক্য করতে পারিনা। করব কি করে? খারাপ মানুষগুলোও দেখতে যে একদম মানুষের মত! তারপরও ঠকতে থাকা মানুষগুলো হেরে যায়না। কষ্টকে শক্তি ভেবে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। অমানিশার ঘোর কাটিয়ে একদিন না একদিন তারাও সাফল্য অর্জন করে। সেটা আজ বা কাল অথবা পরশু! হাতে হাত রেখে, অল্প সাহস পেলে যে কাজটা তাড়াতাড়ি হয়ে যেত সেটা না হয় কিছুদিন পিছালো। তারপরও কারো জীবন থেমে থাকে না। লেগে থাকলে সাফল্য আসবেই, আসতে বাধ্য। আর তখন এই মানুষগুলোই দুধের মাছির মত এসে কংগ্রেটস জানাবে। কি আশ্চর্য না? তাদের একটুও লজ্জা লাগবে না তখন। কি অদ্ভুত এই জীবন! বড় অদ্ভুত! জীবনের রাস্তায় মানুষ গুলোকে চিনা অারো কঠিন হয়ে পড়ে কে কোন মানসিকতায় ঘুরে ফিরে তা বলা অারো বাহুল্য। দুধের মাছিগুলো সময়ের সাথে সাথে জীবনে ভিড় জমায় অাবার সামান্যতম ক্রুটি পেলে জীবন হতে সন্তপর্নে সরে পড়ে।
মোঃ হাবীব
তরুণ উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থী
চট্টগ্রাম কলেজ